আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের ৪ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা

মার্কিন ও ইসরায়েলি নাগরিকদের বিরুদ্ধে আইনি লড়াইয়ের জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে ওয়াশিংটন। বুধবার (২০ আগস্ট) মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে জানানো হয়, আইসিসির দুই বিচারক ও দুই কৌসুঁলির বিরুদ্ধে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হলো। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।

নিষেধাজ্ঞাপ্রাপ্তরা হচ্ছেন বিচারক নিকোলা জিলু, বিচারক কিম্বারলি প্রস্ট, ডেপুটি প্রসিকিউটর নাজহাত শামীম খান এবং মামে মানদিয়ায়ে নিয়াং। তারা চারজন যথাক্রমে ফ্রান্স, কানাডা, ফিজি ও সেনেগালের নাগরিক।

নিষেধাজ্ঞার ঘোষণায় আইসিসির বিরুদ্ধে রাজনীতিকীকরণ, ক্ষমতার অপব্যবহার ও অবৈধ বিচারিক হস্তক্ষেপের অভিযোগ এনেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। সংস্থাটিকে জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, আইসিসি হচ্ছে মার্কিন ও ইসরায়েলি নাগরিকদের বিরুদ্ধে আইনি হেনস্থার একটি অস্ত্রস্বরূপ।

যুক্তরাষ্ট্রের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। গাজা যুদ্ধকে কেন্দ্র করে নেতানিয়াহু এবং ইসরায়েলের সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে আন্তর্জাতিক সংস্থাটি।

অন্যদিকে, মার্কিন নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্তকে দুঃখজনক বলে মন্তব্য করেছে আইসিসি। এটিকে তাদের স্বাধীনতা ও নিরপেক্ষতার ওপর স্পষ্ট আঘাত উল্লেখ করে এক বিবৃতিতে আইসিসি বলেছে, মার্কিন সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক নিয়মভিত্তিক শৃঙ্খলার প্রতি চ্যালেঞ্জ এবং সারা বিশ্বের লাখো নিরীহ ভুক্তভোগীর প্রতি অবমাননা।

একই সুরে কথা বলেছে ফ্রান্স। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এটি স্বাধীন বিচার বিভাগের নীতির পরিপন্থি।

মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য থেকে জানা যায়, নেতানিয়াহু ও গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা অনুমোদনের কারণে বিচারক জিলুর বিরুদ্ধে নিষিধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। বিচারক প্রস্টের বিরুদ্ধে আফগানিস্তানে মার্কিন সেনাদের বিষয়ে তদন্ত পরিচালনার অভিযোগ আনা হয়েছে। আর খান ও নিয়াংকে অভিযুক্ত করা হয়েছে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে অবৈধ পদক্ষেপের জন্য।

নিষেধাজ্ঞার ফলে যুক্তরাষ্ট্রে তাদের কোনও সম্পদ ও আর্থিক স্বার্থ থাকলে, তা দেশটির কাছে জব্দ থাকবে।

এর আগে চলতি বছরেই আইসিসির প্রধান প্রসিকিউটর করিম খান ও আরও কয়েকজন বিচারকের ওপর একই ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান তখন ওই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, এই সিদ্ধান্ত আইনের শাসনের প্রতি সম্মানের সরাসরি বিরোধী।

গত জুলাই মাসে জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের বিশেষ প্রতিবেদক ফ্রান্সেসকা আলবানেসের বিরুদ্ধেও নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। তিনি গাজায় পরিচালিত ইসরায়েলি সামরিক অভিযানের কড়া সমালোচক এবং আইসিসির প্রতি প্রকাশ্যে সমর্থন জানিয়ে আসছিলেন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *